পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি কাকে বলে
  আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। আপনি কি জানেন লিমিটেড কোম্পানি কাকে বলে? যদি না
  জেনে থাকেন তাহলে একদম সঠিক জায়গায় চলে এসেছেন কেননা আমরা এই আর্টিকেলটিতে
  পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি কাকে বলে এবং এর বৈশিষ্ট্য সহ বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
প্রিয় পাঠক আপনি যদি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি এবং প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি
  সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ
  শেষ পর্যন্ত পড়ুন।চলুন তাহলে আর সময় নষ্ট না করে কোন বিষয়ে যাওয়া যাক।
সূচিপত্রঃ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি কাকে বলে
ভূমিকা
  কোম্পানি আইনের অধীনে গঠিত ও পরিচালিত কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তার অধিকারী সীমিত
  দায়বিশিষ্ট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে কোম্পানি সংগঠন বলে। কোম্পানি সংগঠন আইনের অধীনে
  গঠিত, পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয় বিধায় এ ব্যবসায় সহজে ভাঙ্গে না এবং তা চিরন্তন
  অস্তিত্বের মর্যাদা লাভ করে। এটি নিজ নামে পরিচিত ও পরিচালিত হয় বিধায় ব্যক্তিক
  স্বার্থ ও কর্তৃত্ব এখানে মুখ্য হতে পারে না।
  আরও পড়ুনঃ যৌথ মূলধনী কোম্পানি কাকে বলে
  সদস্য সংখ্যা বেশি হওয়ায় এক্ষেত্রে পর্যাপ্ত মূলধন সংগ্রহ ও বৃহদায়তন প্রতিষ্ঠান
  গড়ে তোলা সহজ হয়। যে কোম্পানির সদস্য সংখ্যা সর্বনিম্ন সাতজন এবং সর্বোচ্চ সদস্য
  সংখ্যা স্মারকলিপিতে বর্ণিত শেয়ারের পরিমাণ দ্বারা সীমাবদ্ধ, শেয়ার অবাধে
  হস্তান্তরযোগ্য এবং কোম্পানির শেয়ার ও ঋণপত্র জনগণের উদ্দেশ্যে ক্রয়-বিক্রয়ের
  আহবান জানানো যায় তাকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি বলে। নিচে এ সম্পর্কে বিস্তারিত
  উল্লেখ করা হয়েছে।
পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি কাকে বলে
  যে কোম্পানির সদস্য সংখ্যা সর্বনিম্ন ৭ এবং সর্বোচ্চ স্মারকলিপিতে উল্লেখ শেয়ার
  সংখ্যা দ্বারা সীমাবদ্ধ, শেয়ার অবাধে হস্তান্তরযোগ্য এবং শেয়ার ও ঋণপত্র জনগণের
  উদ্দেশ্যে বিক্রয়ের জন্য আহবান জানানো যায় তাকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি বলে।
  কোম্পানি সংগঠনের উন্নততর সংস্করণই হলো পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি।
  অধিক সদস্য সংখ্যা থাকার সুবাদে এবং যে কোনো সময় জনগণের উদ্দেশ্যে শেয়ার ও ঋণপত্র
  বিক্রয়ের আহ্বান জানানোর সুযোগে এই সংগঠন অনেক বৃহদায়তন কোম্পানি হিসেবে গড়ে উঠতে
  পারে। বৃহদায়তন আকারে গঠিত এরূপ কোম্পানিকে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান নামেও আখ্যায়িত
  করা হয়। 
  আরও পড়ুনঃ অংশীদারি চুক্তিপত্র কি
  শেয়ার সংখ্যা অনুযায়ী ভোট সংখ্যা নির্ধারিত হওয়ায় এক্ষেত্রে অধিক মূলধন দাতাদের
  স্বার্থ যেমনি সুরক্ষিত থাকে তেমনি সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররাও যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না
  হয় সেজন্য আইনে তাদের স্বার্থ সংরক্ষণেও নানান বিধি-বিধান নির্দিষ্ট করা হয়েছে।
  এক্ষেত্রে কমপক্ষে ৩ জন পরিচালক থাকতে হয় এবং যাদের এক তৃতীয়াংশকে প্রতি বছর
  সাধারণ সভায় বাধ্যতামূলকভাবে অবসর নিতে হয়।
  অবশ্য তারা আবার পুননির্বাচিত হতে পারেন। এরূপ কোম্পানি শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত
  হলে তার শেয়ার এই মার্কেটে অবাধে ক্রয়-বিক্রয় হতে পারে। ফলে লভ্যাংশ ছাড়াও শেয়ার
  মূল্য বৃদ্ধির কারণে শেয়ারহোল্ডারগণ লাভবান হয়ে থাকেন। বাংলাদেশে সকল কর্পোরেট
  প্রতিষ্ঠান, বাণিজ্যিক ব্যাংক, নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বড় সকল কোম্পানিই
  পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি।
পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির বৈশিষ্ট্য
  প্রিয় পাঠক আমরা ইতিমধ্যে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি।
  চলুন তাহলে এবার এর বৈশিষ্ট্য সমূহ জেনে নেওয়া যাক। নিচে পাবলিক লিমিটেড
  কোম্পানির বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হলোঃ
- পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি গঠনে অধিক আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে হয় বিদায় গঠন তুলনামূলকভাবে জটিল।
- এর সদস্য সংখ্যা সর্বনিম্ন ৭ জন এবং সর্বোচ্চ সীমা শেয়ার সংখ্যা দ্বারা সীমাবদ্ধ।
- একে কাজ শুরু করার জন্য কার্যারম্ভের অনুমতি পত্র সংগ্রহ করতে হয়।
- এরকম কোম্পানি জনসাধারণের উদ্দেশ্যে শেয়ার ও ঋণপত্র বিক্রয়ের আহবান জানাই।
- এই ধরনের কোম্পানির শেয়ার অবাধে হস্তান্তরযোগ্য।
- এ ধরনের কোম্পানিতে সদস্য সংখ্যা বেশি হওয়ায় এক্ষেত্রে মূলধনের পরিমাণ বেশি হয় ফলে এরূপ সংগঠন বৃহদায়তন প্রকৃতিতে গড়ে ওঠে।
- এ ধরনের কোম্পানিতে কার্যারম্ভের অনুমতি পত্র পাওয়ার জন্য একে বাধ্যতামূলকভাবে ন্যূনতম মূলধন সংগ্রহ করে।
- আইনগতভাবে এ সকল কোম্পানিতে ন্যূনতম তিনজন পরিচালক থাকে।
প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি কাকে বলে
  যে শেয়ার দ্বারা দায় সীমাবদ্ধ কোম্পানির সর্বনিম্ন সদস্য সংখ্যা দুই এবং সর্বোচ্চ
  সদস্য সংখ্যা পঞ্চাশজনে সীমাবদ্ধ থাকে, জনসাধারণের উদ্দেশ্যে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়
  নিষিদ্ধ থাকে এবং পরিমেল নিয়মাবলির বিধান দ্বারা শেয়ার হস্তান্তর অযোগ্য বিবেচিত
  হয় তাকেই প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি বলে।
  সাধারণত ঘরোয়া পরিবেশে পরিচিতজনদের নিয়ে তুলনামূলকভাবে কম মূলধন সম্বলিত এরূপ
  ব্যবসায় গঠিত হলেও এটি আইনসৃষ্ট কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তার অধিকারী চিরন্তন
  অস্তিত্ববিশিষ্ট ব্যবসায় সংগঠন। ফলে তা অংশীদারি ব্যবসায়ের অসুবিধা থেকে
  অনেকাংশেই মুক্ত।
  আরও পড়ুনঃ
  যৌথ মূলধনী কোম্পানির বৈশিষ্ট্য
  কোম্পানি আইনের যে কড়াকড়ি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিকে মানতে হয় প্রাইভেট লিমিটেড
  কোম্পানিকে সে বিষয়েও অনেক ছাড় দেয়া হয়েছে। কমপক্ষে দু'জন পরিচালক নিয়েই এ
  প্রতিষ্ঠান চলতে পারে এবং নতুন প্রয়োজন দেখা না দেয়া পর্যন্ত পূর্বে গঠিত
  পরিচালনা পর্ষদই কাজ করে যেতে পারে। ফলে যে কোনো দেশে অধিকাংশ কোম্পানিই প্রাইভেট
  লিমিটেড কোম্পানি।
প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির বৈশিষ্ট্য
  প্রিয় পাঠক আমরা ইতিমধ্যে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি।
  চলুন তাহলে এবার এর বৈশিষ্ট্য সমূহ জেনে নেওয়া যাক। নিচে প্রাইভেট লিমিটেড
  কোম্পানির বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হলোঃ
- কোম্পানি গঠন তুলনামূলকভাবে অনেকটা সহজ।
- প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির সদস্য সংখ্যা সর্বনিম্ন ২ এবং সর্বোচ্চ ৫০ জোনে সীমাবদ্ধ।
- এরূপ কোম্পানিতে নিবন্ধন পাওয়ার পর কাজ শুরু করা যায়।
- প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির শেয়ার অবাধে হস্তাক্ষর যোগ্য নয়।
- এরকম কোম্পানিতে কাজ শুরু করার জন্য নূন্যতম মূলধন সংগ্রহের ক্ষেত্রে অপরিহার্য নয়।
- এ ধরনের কোম্পানিতে সর্বনিম্ন দুইজন পরিচালক থাকলেই চলে।
- প্রতিবছরের পরিচালক পর্ষদ গঠনের প্রয়োজন পড়ে না।
- এরূপ কোম্পানিতে বিধিবদ্ধ সভা আহ্বান ও বিধিবদ্ধ বিবরণী তৈরির আবশ্যক নয়।
শেষ কথা
  আমাদের এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি
  আর্টিকেলটির মাধ্যমে পাবলিক এবং প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি সম্পর্কে বিস্তারিত
  ধারণা লাভ করতে পেরেছেন। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন। আপনার
  কোন মতামতের অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
  এমন বিভিন্ন ধরনের আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন কেননা
  আমরা আমাদের ওয়েবসাইটটিতে নিয়মিত নতুন নতুন আর্টিকেল পাবলিশ করে থাকি। আপনাদের
  সুস্থতা কামনা করে আজকের মত বিদায় নিচ্ছি। আমাদের সাথে থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url